অ্যান্ড্রয়েড ফোন তৈরির পর থেকে মানুষের মধ্যে ফোন ব্যবহারের প্রতিযোগিতা বেড়ে গিয়েছে । কারণ অ্যান্ড্রয়েড ফোন সহজলভ্য হওয়া । অ্যান্ড্রয়েড ফোন সুন্দরভাবে চালানোর জন্য যে সফটওয়্যার বা অ্যাপসগুলো প্রয়োজন তার সবই ফ্রি পাওয়ার জন্য । আর অ্যান্ড্রয়েড ফোন সহজলভ্য হওয়ার কারণে মোবাইল কলের চেয়ে মেসেজও কলিং অ্যাপস চাহিদা আনেক বেড়ে গিয়েছে ।
আর অ্যান্ড্রয়েড ফোন ব্যবহারকারীরা তাদের প্রয়োজনে এক বা একাধিক পরিমাণে এই মেসেজও কলিং অ্যাপস ব্যবহার করে থাকে । এই অ্যাপসগুলোর মাধ্যমে বন্ধু-বান্ধব পরিবার ও আত্মীয় স্বজনদের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করে থাকে । তাই আমরা তেমনি টপ ১০টি মেসেজিং কলিং আপস সম্পর্কে জনাব।
১। WhatsApp Messenger-হোয়াটসঅ্যাপ মেসেঞ্জারঃ
মেসেজিং ও কলিং আপস হিসেবে সবার উপরে স্থান ধরে রেখেছে WhatsApp Messenger.তাদের নিজস্ব কিছু ফিচার এর কারণে তাদের এত জনপ্রিয়তা রয়েছে । তাদের ফিচারগুলোর মধ্যে অন্যতম লোকেশন শেয়ার ডকুমেন্ট কন্টাক্ট গ্রুপ কলিং এর মাধ্যমে ৮ জন সর্বোচ্চ একই সাথে কথা বলা যায় ।
এছাড়া ছবি ও সাধারণ চ্যাট করা যায় । সেটাআপ খুব সহজ হওয়ার কারণে সহজেই একজন ইউজার ব্যবহার করতে পারে। এখন পর্যন্ত গুগল প্লে স্টোরে ৫ বিলিয়ন বার ডাউনলোড করা হয়েছে ।
আপনি ডাউনলোড করার পর পর আপনার ফোন নম্বর লিস্টে যারা WhatsApp ব্যবহার করেন তাদের অটোমেটিকভাবে লিস্টে পেয়ে যাবে । অ্যাপস ছাড়াও এর একটা ওয়েব ভার্সন আছে যা আপনি পিসি বা ল্যাপটপ এ ব্যবহার কারতে পারবেন ।
২। Facebook Messenger-ফেসবুক মেসেঞ্জারঃ
বর্তমানে ফেসবুক সম্পর্কে জানে না এমন মানুষ পাওয়া খুবই কষ্টকর । তাই বলা যায় যে, বর্তমানে সবাই প্রায় ফেসবুক ব্যবহার করা থাকেন । আর এই ফেসবুকের অন্য একটি সার্ভিস ফেসবুক মেসেঞ্জার । Facebook Messenger এর মাধ্যমে আপনি অপর ফেসবুক মেসেঞ্জার ব্যবহারকারীর সাথে মেসেজ ভিডিও অডিও কল করাতে পারবেন ।
পারবেন বিভিন্ন অডিও ভিডিও ফাইল শেয়ার করতে । আরো পারবেন বিভিন্ন প্রকার স্টিকার যা মেসেঞ্জারকে আরো আকর্ষনীয় করে তুলবে । অ্যাপসের মাধ্যমে ছাড়াও পিসি, ল্যাপটপ এর মাধ্যমে ব্যবহার করা যায় । বর্তমানে গুগল প্লে স্টোরে ১ বিলিয়ন এর বেশি বার ডাউনলোড করা হয়েছে ।
৩। Skype-স্কাইপঃ
মেসেজ ও অডিও কলিং জগতে বেশি ব্যবহার হয়ে থাকে Skype . এক সময় মেসেজ ও কলিং জগতে একাই সব কাজ করেছে স্কাইপ । সেটা প্রফেশনাল কিংবা সাধারণ যায় হোক না কেন সবচেয়ে বেশি ব্যবহারকারী স্কাইপি । তারা বর্তমান চাহিদার সাথে তাল না মিলার করণে তারা একটু ডাউন অবস্থায় আছে ।
তারপরে ও এখন পর্যন্ত গুগল প্লে স্টোরে তাদের ডাউনলোডের সংখ্যা ১ বিলিয়ন যা মেসেজিং ও কলিং জগতে ভালো অবস্থানে আছে । স্কাইপিতে অডিও ভিডিও কলের পাশাপাশি মেসেজ করা ও স্টিকার দেওয়া নেওয়া যায় । বলা যায় যে, প্রফেশনাল জগতে বেশি ব্যবহার হয়ে থাকে স্কাইপ।
৪। Snapchat-স্ন্যাপচ্যাটঃ
মেসেজিং জগতে স্ন্যাপচ্যাট বেশ জনপ্রিয় । স্ন্যাপচ্যাট সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়তা পেয়েছে তরুণ সমাজ ও সেলিব্রেটিদের মধ্যে । অন্যান্য অ্যাপসের মত এখানে অডিও কল ভিডিও কল ভিডিও মেসেজ । ফটো ও সাধারণ মেসেজ করা যায় ।
স্ন্যাপচ্যাটে অনেকগুলো সুবিধা রয়েছে যেমনঃ দুইজনের মেসেজ বা কথোপকথোন দেখার পর অটোমেটিক ডিলিট হয়ে যায়। যা তৃতীয় পক্ষ দেখার কোনো সু্যোগ থাকে না । চ্যাট চলা সময়ে কেউ যদি স্ক্রিনশট নেওয়ার চেষ্টা করে তাহলে অপর প্রান্তের লোকের কাছে স্ন্যাপচ্যাট মেসেজ পাঠিয়ে দেয় ।
স্ন্যাপচ্যাট তাদের স্টোরির মেয়াদ থাকে ২৪ ঘণ্টা । এখন পর্যন্ত গুগল প্লে স্টোরে ডাউনলোড করা হয়েছে ১ বিলিয়ন বার।
৫। Telegram-টেলিগ্রামঃ
মেসেজিং অ্যাপের মধ্যে অত্যন্ত জনপ্রিয় টেলিগ্রাম অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ । এদের মোবাইল ছাড়াও কম্পিউটার এর সফটওয়্যার পাওয়া যায় । টেলিগ্রাম সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হয়ে থাকে গ্রুপ চ্যাটের জন্য । টেলিগ্রাম একটা গ্রুপে সর্বোচ্চ ২,০০,০০০ জনকে অ্যাড করা যায় ।
এছাড়া ছবি ও মেসেজ ফাইল শেয়ার করা যায় । এখানে ফাইল শেয়ারের কোনো লিমিট থাকেনা । যেকোনো সাইজের ফাইল চাইলে আপনি শেয়ার করতে পারেন। টেলিগ্রাম একজন ব্যবহারকারীর তথ্যের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দিয়ে থাকে ।
টেলিগ্রাম এর চ্যাট ২৫৬ বিট সিনেট্রিক এনক্রিপশন ২০৪৪ বিট আরএসএ এনক্রিপশন দ্বারা সুরক্ষিত । টেলিগ্রামের ডাটাসমূহ ক্লাউডে সংরক্ষণ করা হয় । এখন পর্যন্ত গুগল প্লে স্টোরে ৫০০ মিলিয়ন বার ডাউনলোড করা হয়েছে ।
৬। IMO-ইমোঃ
মেসেজিং জগতে আরো একটি অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ IMO . বলা যায় যে, বাংলাদেশিদের মধ্যে যাদের অ্যান্ড্রয়েড ফোন আছে তাদের প্রায় সবারই ইমো অ্যাপ ইনস্টল দেওয়া আছে । কারণ ব্যবহার ব্যবস্থা অনেক সহজ হওয়ার কারণে যে কেউ ব্যবহার করতে পারে ।
ইমো অ্যাপের মাধ্যমে আপনি খুব সহজেই ছবি ও মেসেজ করতে পারবেন । আর যে কারণে বেশি ব্যবহার হয়ে থাকে অডিও ও ভিডিও কল এর জন্য। ব্যবহারকারীর অল্প ডাটা ব্যবহার করে খুব সহজেই যোগাযোগ স্থাপন করতে পারে ।
অল্প ডাটা খরচ হওয়ার করণে তাদের জনপ্রিয়তা অনেক বেশি । এখন পর্যন্ত গুগল প্লে স্টোরে ৫০০ মিলিয়ন বার ডাউনলোড করা হয়েছে ।
৭। Line-লাইনঃ
জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকা আর একটি অ্যাপ লাইন । লাইন অ্যাপে আপনি অন্য অ্যাপের মত কল করতে পারবেন ও মেসেজ করতে পারবেন । এর পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের স্টিকার ব্যবহার করতে পারবেন । টেলিগ্রামের মত গ্রুপ চ্যাট করা যায় । তবে গ্রুপে সর্বোচ্চ ৫০০ জন পর্যন্ত অ্যাড করা যায় । এখন পর্যন্ত গুগল প্লে স্টোরে ৫০০ মিলিয়ন বার ডাউনলোড করা হয়েছে । সুযোগ সুবিধার ক্ষেত্রে এটি ভালো একটি অ্যাপ বলা ।
৮। Viber Messenger- ভাইবার মেসেঞ্জারঃ
জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছে আরো একটি অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ ভাইবার । ভাইবার খুব একটা সাদাসিদে অ্যাপ নয় কারণ ভাইবারে রয়েছে অনেক ফাংশন যা কারনে অনেক কিছু দেখতে হয় একসাথে । বর্তমানে নতুন নতুন অ্যাপ ও নতুন নতুন ফিচার আশার কারণে তাদের কিছুটা জনপ্রিয়তা কমে গিয়েছে তার পরেও ভালো জনপ্রিয় আছে ।
ভাইবারে আপনি চ্যাট করতে পারেন , পারেন ভিডিও কল গ্রুপ চ্যাট । এছাড়া আছে স্টিকার যা ব্যবহারকারীর আরও ব্যবহার করার ইচ্ছাকে বাড়িয়ে তোলে । এখন পর্যন্ত গুগল প্লে স্টোরে ৫০০ মিলিয়ন বার ডাউনলোড করা হয়েছে ।
৯। Wechat-উইচ্যাটঃ
আপনারা অনেকই জেনে থাকবেন চীনে গুগলের সার্ভিস বা যুক্তরাষ্ট্রের অনেক সার্ভিস নিষিদ্ধ আছে । তাই তারা নিজেদের তৈরি মেসেজিং অ্যাপ ব্যবহার করে থাকে । উইচ্যাট চীনে অনেক জনপ্রিয় একটা মেসেজিং অ্যাপ । এই অ্যাপে অনেক ফিচার রয়েছে যেমনঃ লোকেশন শেয়ার অডিও ভিডিও কলিং সুবিধা ।
পেমেন্ট ও গেমস খেলার মত সুবিধা রয়েছে । আপনি চাইলে স্টিকার ও ফটো শেয়ার করাতে পারন । চীনের সার্ভার বাদেও গুগল প্লে স্টোরে পাওয়া যায়। এখন পর্যন্ত গুগল প্লে স্টোরে ১০০ মিলিয়ন বার ডাউনলোড করা হয়েছে ।
১০। Privacy Messenger-প্রাইভেসি মেসেঞ্জারঃ
আমাদের সর্বশেষ অবস্থানে আছে প্রাইভেসি মেসেঞ্জার । নাম দেখেই বোঝা যায় তারা কতটুকু প্রাইভেট মেসেঞ্জার। অন্য অ্যাপের মত এখানে থাকছে অডিও ভিডিও কলিং ব্যবস্থা । মেসেজ ও বিভিন্ন প্রকার স্টিকার সেন্ড করা যায় । আপনার মেসেজকে পারবেন Backup ও Restore করতে পারবেন । এখানে ১০০০০+ HD Wellpapers আছে । আপনি চাইলে আপনার মেসেজগুলো হাইড করে রাখতে পারেন । এখন পর্যন্ত গুগল প্লে স্টোর থেক ৫ মিলিয়ন বার ডাউনলোড করা হয়েছে ।